ফিলিস্তিনের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর রাফাতে বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। হামলায় অন্তঃসত্ত্বা নারী ও ৬ শিশুসহ ১০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। তবে রাফার চিকিৎসকরা ওই নারীর অনাগত সন্তানকে বাচাতে সফল হয়েছে।
শনিবার (২০ এপ্রিল) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় রাফা শহরের একটি বাড়িতে ইসরায়েলি বিমান হামলায় ছয় শিশুসহ কমপক্ষে ১০ জন নিহত হয়েছেন বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
ইসরায়েল অবরুদ্ধ এই ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে প্রায় সাত মাস ধরে আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে এবং এখন পর্যন্ত ৩৪ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
গাজার বেসামরিক প্রতিরক্ষা বিভাগ অনুসারে, আগের রাতে রাফা শহরের পশ্চিম তাল-আস-সুলতান পাড়ায় হামলায় নিহতদের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
আল জাজিরা বলছে, ইসরায়েলি হামলা ও প্রাণহানির পর আল-নাজ্জার হাসপাতালে নিহতদের স্বজনরা সাদা কাফনে জড়িয়ে থাকা শিশুদের লাশ জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন। শোকার্ত এক দাদি বলেন, আমার প্রিয় হামজা। তোমার চুল খুব সুন্দর দেখাচ্ছে।
নিহতদের মধ্যে আবদেল-ফাত্তাহ সোভি রাদওয়ান, তার স্ত্রী নাজলা আহমেদ আওয়েদাহ এবং তাদের তিন সন্তান রয়েছে বলে তার শ্যালক আহমেদ বারহুম জানিয়েছেন। বারহুম তার স্ত্রী রাওয়ান রাদওয়ান এবং তাদের পাঁচ বছর বয়সী কন্যা আলাকে হারিয়েছেন।
বারহুম দ্য অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে বলেছেন, এটি সমস্ত মানবিক মূল্যবোধ এবং নৈতিকতা বর্জিত বিশ্ব। তারা বাস্তুচ্যুত মানুষ, নারী ও শিশুদের ভরা বাড়িতে বোমাবর্ষণ করেছে। এসব হামলায় একমাত্র শহীদ নারী ও শিশু।
আল জাজিরার হানি মাহমুদ রাফা থেকে বলেছেন, আল-নাজ্জার হাসপাতাল থেকে তাদের চূড়ান্ত দাফনের জন্য মৃতদেহ স্থানান্তরের দৃশ্যটি হৃদয়বিদারক ছিল।
তিনি বলেন, অধিকাংশ শিশু ছিল রক্তে ভেজা সাদা চাদরে মোড়ানো আমরা হাসপাতালের একজন ডাক্তারের সাথে কথা বলেছিলাম, যিনি তাদের ধ্বংসাত্মক ক্ষত, রক্তে ভেজা বলে বর্ণনা করেছেন।
তিনি আরও বলেন, তাদের পোড়া অবস্থা এতটাই খারাপ ছিল, তাদের জীবিত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে গেলেও তারা দ্রুত প্রাণ হারাতে পারত, কারণ বর্তমান পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে এই ধরনের আঘাতের এখনই চিকিৎসা করা সম্ভব নয়।
আল জাজিরার সাংবাদিকরা বলেছেন, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী শনিবারও শহরে হামলা চালিয়েছে। সংবাদদাতা তারেক আবু আজজুম বলেন, চলমান এই যুদ্ধে কোনো বিরাম নেই।