ভাষা আন্দোলনের ৭৩ বছর পার হলেও ভাষা শহীদ আবদুস সালামের পরিবারের আক্ষেপ এখনো ঘোচেনি। দীর্ঘ সময়েও তাদের বেশ কিছু দাবি পূরণ হয়নি, যা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্বজন ও স্থানীয়রা।
২০১৭ সালে ঢাকার আজিমপুর কবরস্থানে শহীদ সালামের কবর শনাক্ত করা হলেও সংরক্ষণের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। পরিবারের দাবি, এটি স্থায়ীভাবে সংরক্ষণ করা হোক।
দাগনভূঞা বাজারের জিরো পয়েন্টকে ‘সালাম চত্বর’ নামকরণ, ঢাকা-ফেনী-দাগনভূঞা সড়ককে সালামের নামে নামকরণ, মহাসড়কের পাশে সালামের বাড়ি নির্দেশক তোরণ নির্মাণ এবং ভাষা শহীদ সালাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জন্য সরকারিভাবে গেজেট প্রকাশের দাবি দীর্ঘদিন ধরে জানানো হলেও আজও তা বাস্তবায়ন হয়নি। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা মোসাম্মৎ নুরজাহান বেগম জানান, নামকরণের সাত বছর পার হলেও মন্ত্রণালয় থেকে গেজেট প্রকাশ হয়নি।
মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সরকারি কোটা ও ভাতা থাকলেও ভাষা শহীদদের জন্য কোনো কোটা বা ভাতা নেই, যা নিয়ে পরিবারের সদস্যরা হতাশা প্রকাশ করেছেন। ভাষা শহীদ আবদুস সালামের ভাতিজা মো. নূরে আলম কোটা ও ভাতা সংযোজনের দাবি জানিয়েছেন।
দাগনভূঞা উপজেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামের নাম একসময় ‘ভাষা শহীদ সালাম অডিটোরিয়াম’ করা হলেও পরে তা পরিত্যক্ত ঘোষণা করে নিলামে বিক্রি করা হয়। নতুন ভবন নির্মাণ হলেও সেখানে সালামের নাম রাখা হয়নি। তার পরিবার ও স্থানীয়রা আবারও অডিটোরিয়ামের নামকরণের দাবি জানিয়েছেন।
২০০৮ সালে প্রায় ৬৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘ভাষা শহীদ আবদুস সালাম গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর’ নির্মাণ করা হলেও এটি বর্তমানে অবহেলিত অবস্থায় আছে। প্রতি বছর শুধু ফেব্রুয়ারি মাসে কিছুটা পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালানো হয়, কিন্তু সারাবছর এটি নিষ্প্রাণ অবস্থায় থাকে। স্থানীয়দের মতে, এটি দৃষ্টিনন্দন করে সাজালে নতুন প্রজন্ম ভাষা শহীদের সম্পর্কে জানতে পারবে।
ফেনী জেলা পরিষদের প্রশাসক জানিয়েছেন, ফেনী-নোয়াখালী মহাসড়কে সালামনগর নির্দেশক তোরণ নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। তবে পরিবারের দাবি, শুধুমাত্র তোরণ নয়, ভাষা শহীদ আবদুস সালামের স্মৃতি রক্ষায় সব প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করতে হবে।
শহীদ সালামের পরিবারের সদস্যরা ও স্থানীয়রা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন, যেন ভাষা আন্দোলনের এই মহান শহীদের স্মৃতি সংরক্ষণ ও সম্মানিত করা যায়।