সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ বাতিলের প্রতিবাদে শাহবাগে অনড় অবস্থান
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে বাতিল হওয়া নিয়োগ পুনর্বহালের দাবিতে আজ শনিবার সকাল ৯টা থেকে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন আন্দোলনকারীরা। টানা ১০ দিন ধরে তাঁরা এ কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন এবং জানিয়েছেন, নিয়োগের নিশ্চয়তা না পাওয়া পর্যন্ত রাজপথ ছাড়বেন না।
১০ দিনের লাগাতার আন্দোলন
আন্দোলনকারীদের একজন, আসাদুজ্জামান, প্রথম আলোকে জানান, প্রতিদিন সকাল থেকে শাহবাগে অবস্থান করলেও রাত কাটান জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে। এভাবে টানা ১০ দিন ধরে তাঁরা তাদের দাবির প্রতি অনড় অবস্থান বজায় রেখেছেন। আন্দোলনকারীদের ভাষ্যে, প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের প্রক্রিয়ায় যাঁরা নিয়োগ পেয়েছিলেন, তাঁরা ইতিমধ্যে চাকরিতে যোগ দিয়েছেন। অথচ একই প্রক্রিয়ায় তৃতীয় ধাপে নিয়োগপ্রাপ্ত ঢাকা ও চট্টগ্রামের ২১ জেলার প্রার্থীরা নিয়োগবঞ্চিত হয়েছেন, যা এক প্রহসনের শামিল।
পুলিশি বলপ্রয়োগ ও দমন-পীড়ন
আন্দোলনকারীরা অভিযোগ করেছেন, তাঁদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি তিন দিন ধরে পুলিশি বলপ্রয়োগের মুখে পড়েছে। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার পুলিশ তাঁদের ওপর জলকামান নিক্ষেপ ও লাঠিপেটা করেছে। এর আগে, ৯ ফেব্রুয়ারি আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে জলকামান, সাউন্ড গ্রেনেড ও কাঁদানে গ্যাসের শেল ব্যবহার করা হয়।
নিয়োগ প্রক্রিয়া: শুরু থেকে স্থগিতাদেশ
আন্দোলনকারীদের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ১৪ জুন তৃতীয় ধাপের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। ২০২৪ সালের ২৯ মার্চ লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় এবং ২১ এপ্রিল প্রকাশিত হয় ফলাফল। ১২ জুন সাক্ষাৎকার নেওয়ার পর ৩১ অক্টোবর ৬ হাজার ৫৩১ জনকে চূড়ান্তভাবে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করা হয়।
কিন্তু সুপারিশপ্রাপ্তদের মধ্যে ৩১ জন আদালতে রিট করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে নিয়োগ প্রক্রিয়া ছয় মাসের জন্য স্থগিত করা হয়। এরপর ৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টের রায়ে নিয়োগ বাতিল করা হয়।
আশার আলো আপিলের মাধ্যমে
নিয়োগপ্রত্যাশীদের আশা, এই রায় পুনর্বিবেচনায় সরকারের নেওয়া পদক্ষেপ সফল হবে। ইতিমধ্যে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করেছে।
আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, এই ৬ হাজার ৫৩১ জন নিয়োগপ্রার্থী তাঁদের ন্যায্য অধিকার আদায়ে শেষ পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। তাঁদের একটাই দাবি—“নিয়োগপত্র হাতে না নিয়ে ঘরে ফিরব না।”