সম্প্রতি অনির্দিষ্টকালের জন্য পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে ভারত। এদিকে বাংলাদেশেও আবার পেঁয়াজের দাম বেড়েছে এই খবরে। তবে রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও দ্বিপক্ষীয় আলোচনার ভিত্তিতে ভারত থেকে ৫০ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানি করছে বাংলাদেশ। এই আমদানির একটি প্রস্তাবে নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি।
বুধবার অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অর্থনৈতিক বিষয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এ অনুমোদন দেয়া হয়। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সমন্বয় ও সংস্কার সচিব মো. মাহমুদুল হোসাইন খান বৈঠক শেষে এ তথ্য সাংবাদিকদের জানান।
সচিব জানান, ভারতের ন্যাশনাল কো-অপারেটিভ এক্সপোর্ট লিমিটেডের কাছ থেকে এ পেঁয়াজ আমদানি করা হবে। প্রতিষ্ঠানটিকে ঠিক করে দিয়েছে ভারত সরকারই। রাষ্ট্রীয় বিপণন সংস্থা টিসিবির মাধ্যমে এ পেঁয়াজ আনা হবে। তবে আমদানি মূল্য এখনও নির্ধারণ হয়নি। গত ২ মার্চ রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) নারী উদ্যোক্তাদের আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম এক সপ্তাহের মধ্যেই ভারত থেকে ৫০ হাজার টন পেঁয়াজ আসার কথা জানিয়েছিলেন। রমজান শুরুর আগেই ভারতীয় পেঁয়াজ দেশে আসার সম্ভাবনার কথাও বলেছিলেন তিনি।
নিজেদের বাজারে সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রেখেছে ভারত। তবে সম্প্রতি বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম আবুধাবিতে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনে ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গয়ালের সঙ্গে তাঁর দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে পেঁয়াজ আমদানির অনুরোধ জানান। এ পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশকে ৫০ হাজার টন পেঁয়াজ দিতে সম্মত হয় ভারত।
উল্লেখ্য, ভারত গত ৭ ডিসেম্বর পেঁয়াজ রপ্তানি পুরোপুরি বন্ধ করে দেয়, যা আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত বহাল থাকার কথা। তবে পরে ভারত সরকার গত ২৩ মার্চ এই নিষেধাজ্ঞা অনির্দিষ্টকাল থাকবে বলে জানায়। ডিসেম্বরে ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করার পর বাংলাদেশের বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম ১৪০ টাকা পর্যন্ত ওঠে। পরে দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়ায় বাজারে অবশ্য পেঁয়াজের দাম কমে আসে।
বুধবার (২৭ মার্চ) বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে যে, খুচরা বাজারে দেশি পেঁয়াজ কেনাবেচা হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি দরে। আর আমদানি করা পেঁয়াজ কেনাবেচা হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে। টিসিবির হিসাব বলছে, এক মাসে দেশি পেঁয়াজের দাম কমেছে ৪৩ দশমিক ৪৮ শতাংশ। আর আমদানি করা পেঁয়াজের দর কমেছে ২৬ দশমিক ১৯ শতাংশ।