March 16, 2025, 8:37 am

কেন ট্রাম্প-পুতিন বৈঠকের স্থান হিসেবে সৌদি আরবের নাম আলোচনায় এল?

মেহেদী হাসান
ডোনাল্ড ট্রাম্প, মুহাম্মদ বিন সালমান, ভ্লাদিমির পুতিন।

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, তিনি ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের সম্ভাব্য উপায় নিয়ে আলোচনা করতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সৌদি আরবে বৈঠক করতে পারেন। তবে তিনি নির্দিষ্ট কোনো তারিখ উল্লেখ করেননি, তবে বলেছেন, এটি শিগগিরই হতে পারে। ট্রাম্প আরও জানান, এই বৈঠকে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানও অংশ নিতে পারেন।

এই ঘোষণাটি আসে তখন, যখন ট্রাম্প পুতিন এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে ফোনালাপ করেন। সৌদি আরব এক বিবৃতিতে এই সম্ভাব্য বৈঠকের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে এবং বলেছে, দেশটি রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠায় প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে।

নিরপেক্ষ ভেন্যু হিসেবে সৌদি আরবের নির্বাচন

চীন ও সংযুক্ত আরব আমিরাতও এই শীর্ষ সম্মেলন আয়োজনের আগ্রহ প্রকাশ করেছিল। তবে মধ্যপ্রাচ্য ইনস্টিটিউটের ভাইস প্রেসিডেন্ট পল সেলেম মনে করেন, সৌদি আরবের নিরপেক্ষ অবস্থান বৈঠকের জন্য এটিকে একটি যৌক্তিক পছন্দ করে তুলেছে। ইউরোপের কঠোর অবস্থানের কারণে কোনো ইউরোপীয় দেশ এই বৈঠক আয়োজন করতে পারছে না।

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ খাত্তার আবু দিয়াব জানান, ঐতিহ্যগতভাবে জেনেভা এমন বৈঠকের জন্য জনপ্রিয় স্থান হলেও রাশিয়ার সঙ্গে ইউরোপের সম্পর্কের অবনতি হওয়ায় সৌদি আরবকে বেছে নেওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, সৌদি আরব রাশিয়ার সঙ্গে পারস্পরিক আস্থা গড়ে তুলেছে এবং দেশটি আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) সদস্য নয়, ফলে পুতিনের জন্য গ্রেপ্তারের ঝুঁকি থাকছে না। ২০২৩ সালে আইসিসি পুতিনের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিল।

শান্তি প্রচেষ্টায় সৌদি আরবের ভূমিকা

সৌদি আরব ইতিমধ্যে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠায় বেশ কয়েকটি উদ্যোগ নিয়েছে। সম্প্রতি, দেশটির মধ্যস্থতায় রাশিয়া মার্কিন শিক্ষক মার্ক ফোগেলকে মুক্তি দেয়, যিনি তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে আটক ছিলেন।

মার্কিন মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফের মতে, ফোগেলের মুক্তিতে যুবরাজ সালমান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। এছাড়াও, জেদ্দায় অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক বৈঠকে বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদের নিয়ে যুদ্ধ বন্ধের প্রচেষ্টা চালিয়েছে সৌদি আরব।

২০২৩ সালের ডিসেম্বরে পুতিনের রিয়াদ সফরের সময় সৌদি যুবরাজ তাকে সৌদি জনগণের কাছে ‘বিশেষ ও সম্মানিত অতিথি’ বলে অভিহিত করেন। এই বিশ্বাস ও আস্থার ভিত্তিতেই এবার সৌদি আরবে এই বৈঠকের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।

 


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


Our Like Page